নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :::
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে কক্সবাজারের ৭৪ জেলের সন্ধান মেলেনি এক মাসেও। নিখোঁজদের বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাকে অবহিত করার পরও কোনো হদিস মিলছে না তাদের। এতে জেলেদের ফিরে আসা নিয়ে ধোয়াশা সৃষ্টি হয়েছে স্বজনদের মাঝে। ঘূর্ণিঝড় নাডা’র কবলে পড়ে নিখোঁজ হয় এসব জেলে।
একমাস ধরে উৎকণ্ঠা ও অভাব অনটনে মানবেতর জীবন-যাপন করছে নিখোঁজ জেলে পরিবারগুলো। চলছে স্বজনদের আহাজারি আর আর্তনাদ কক্সবাজার শহরের সমিতিপাড়া, নাজিরারটেক ও কুতুবদিয়া পাড়ায়। তারা কোথায় আছে, কেমন আছে কেউ জানে না। বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে তাও বুঝতে পারছে না স্বজনরা। তবে দীর্ঘ ২৪ দিন পর কূলে ফিরে এসেছে তিন জেলে।
ফিরে আসা জেলে উখিয়া উপজেলার সোনারপাড়া গ্রামের হোছন মাঝি, আব্দুল্লাহ ও শফিউল করিম বলেন, নাডা’র প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়। এসময় মাঝ সাগরে ধমকা বাতাস ছিল। একপর্যায়ে বোটের ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। জেলেরা বাঁচতে সাগরে ঝাঁপ গিয়ে ভাসতে থাকে। আমরা থাইল্যান্ডের উপকূলে আশ্রয় নিয়ে ছিলাম। একটি ট্রলারের সাহায্যে নিজ এলাকায় ফিরে আসতে পেরেছি। তবে বাকিরা কোথায় জানিনা।
নিখোঁজ ফিশিংবোট এফবি সাজ্জাদের মালিক মো. কামাল হোসেন কান্না জড়িত কন্ঠে চকরিয়া নিউজকে বলেন, আমার বোট গত ৩ নভেম্বর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যায়। এটি ৬ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় নাডা’র কবলে পড়ে। এখনো পর্যন্ত ১৮জন মাঝিমাল্লাসহ বোটের কোনো খবর নেই। বোট মালিক সমিতি ও জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
এদিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে নিখোঁজ জেলেদের তালিকা সংগ্রহ করছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। এবিষয়ে কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতিকে একটি তালিকা তৈরির নির্দেশও দিয়েছে বলে জানা গেছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) কাজি আবদুর রহমান চকরিয়া নিউজকে জানান, বিভিন্নভাবে জানা গেছে এখনো ৭৪ জেলে নিখোঁজ রয়েছে। জেলেদের বিষয়ে খোঁজ নিতে নৌবাহিনীকে অবগত করা হয়েছে।
কক্সবাজার ফিশিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি মুজিবুর রহমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, নিখোঁজ জেলেদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অবগত করা হয়েছে।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন, আবুল হোসেন বহদ্দারের মালিকানাধীন এফবি সুমি আকতার রেশমী বোটে থাকা মিনহাজ উদ্দিন মাঝি, মানিক, আলী হোসেন, নুরুল ইসলাম, নুর বাদশা, আতা এলাহী, আনোয়ার, আমির হোসেন, মোহাম্মদ উল্লাহ, ইলিয়াছ, নুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ হোসেন, আব্দুল আমিন, নুরুল আলম, মজিবুর রহমান, এরফান, নুরুজ্জামান, ছিদ্দিক, লোকমান, মাহবুব আলম, রবি আলম, মোঃ হোসেন, সাইফুল, মামুন, আবুল কালাম, মকছুদ।
এফবি সাজ্জাদ ফিশিং বোটের নুরু ছৈয়দ মাঝি, জামাল, নুরুল বশর, আরফান, আতিকুর রহমান, মামুন, শাহিন, ছৈয়দ, আব্দু শুক্কুর, মো. গুন্নু, আজম, দুদু মিয়া, মিন্টু, সেলিম, এরশাদ, মো. নুর, মুসলেহ উদ্দিন, মন্জুর, বাবু মিয়া, আব্দুল মজিদ, শাহাদাতুল করিম, সোনা মিয়া, হারুন, ইসমাইল, ইউনুস, নুর কাদের ও দেলোয়ার।
এফবি জায়েদ ফিশিং বোটের মোক্তার মাঝি, মোহাম্মদ রুবেল, আবু হানিফ, আব্দুর রহিম, শফি আলম, মো. লেডু, সিরাজ, ছাদেক, আক্তার, রুহুল আমিন, আজিজুল হক, মো. হামিদ, সাদ্দাম হোসেন, মোহাম্মদ রুহুল আমিন ও করিম।
পাঠকের মতামত: